ওমরায় ইহরামের গুরত্ব

হজ্জ্ব ও ওমরায় ইহরামের গুরত্ব

হজ্জ্ব ও ওমরা দুটিই ইসলামের গুরুত্বপূর্ণ বিধান। পার্থক্য হল, হজ্জ্ব শারীরিক ও অর্থনৈতিকভাবে সক্ষম ব্যক্তিদের জন্য ফরয এবং উমরা ফরয নয়। হজ্জ্ব ও ওমরায় ইহরামের গুরুত্ব অনেক। কারণ, তাকবিরে তাহরিমা না বললে যেমন নামায আদায় শুদ্ধ হয় না, একইভাবে ইহরাম না পরলে হ্জ্জ্ব ও উমরা আদায় করা শুদ্ধ হয় না।

পৃথিবীর বিভিন্ন অংশ থেকে আগত হাজিদের জন্য ভিন্ন ও নির্দিষ্ট স্থান রয়েছে, যে স্থানকে মিকাত বলা হয়। এ মিকাত থেকেই হজ ও উমরাহর জন্য ইহরাম বাঁধতে হয়। নিচে হজ ও ওমরায় ইহরামের গুরুত্ব সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হল।

ইহরাম কী?

ইহরাম আরবি শব্দ, এর অর্থ হল নিষিদ্ধ। মিকাত থেকে পুরুষ হাজিগণ সেলাইবিহীন দুই টুকরো সাদা কাপড় এবং নারী হাজিগণ স্বাচ্ছন্দ্যময় শালীন পোশাক পরিধান করে নিজের ওপর অনেক জিনিস নিষিদ্ধ করে নেন। এজন্য এ পোশককে ইহরামের পোশাক বলা হয়।

ইহরাম কেন হজ্জ ও ওমরার গুরুত্বপূর্ণ অংশ?

হজ্জ্ব ও ওমরায় ইহরামের গুরুত্ব অনেক। নিচে এর কয়েকটি গুরুত্ব তুলে ধরা হল-

  • রুকন: ইহরাম হজ ও ওমরার রুকন বা আবশ্যকীয় অংশ। ওযু না করলে যেভাবে নামাজ শুদ্ধ হয় না। একইভাবে নির্দিষ্ট স্থান থেকে ইহরাম না পরলে হজ্জ ও ওমরাহ আদায়ও শুদ্ধ হয় না।
  • সুন্নতে রাসূল: রাসূলুল্লাহ (সা.) ও সাহাবায়ে কেরাম হজ ও উমরাহ আদায় করেছেন ইহরামের কাপড় পরে। তাই হজ ও ওমরায় ইহরাম পরিধান রাসূলের (সা.) সুন্নত।
  • নিষ্পাপ হওয়ার প্রতীক: আল্লাহর জন্য যে হজ ও ওমরা করে, তাকে আল্লাহ নিষ্পাপ করে দেন। ইহরামের সাদা কাপড় হাজিদের নিষ্পাপ হওয়ার নিদর্শন বহন করে।
  • শান্তি ও সম্প্রীতির শিক্ষা: সাদা শান্তি ও সম্প্রীতির বার্তা দেয়। হজ ও উমরায় ইহরামের সাদা কাপড় পরিধান করে হাজি সাহেবরা সারা বিশ্বে শান্তি ও সম্প্রীতি রক্ষা ও প্রতিষ্ঠার বার্তা দিয়ে থাকেন।
  • সাম্যের শিক্ষা: হজ ও উমরায় সব দেশের ও সব শ্রেণির হাজিগণ ইহরাম পরিধান করে একইসঙ্গে তাওয়াফ এবং অন্যান্য কাজ করেন। ধনী-গরীব ও জাতি-বর্ণ নির্বিশেষে সব হাজি একই পোশাক পরিধান করে সাম্যের শিক্ষা নিয়ে ও দিয়ে থাকেন।
  • মৃত্যুর স্মরণ: মৃত্যুর পর সাদা কাপড়ে মুড়িয়ে দাফন করা হবে। ইহরামের সাদা কাপড় সব মুসলিমকে মৃত্যুর কথা স্মরণ করিয়ে দেয়। সব পাপ থেকে দূরে থেকে আল্লাহর ইবাদতে মনোনিবেশ করার শিক্ষা দেয়।
ইহরাম অবস্থায় নিষিদ্ধ কাজ

ইহরাম অবস্থায় যেসব কাজ নিষিদ্ধ

ইহরাম বাঁধলে যেসব কাজ হাজিগণের জন্য করা নিষিদ্ধ হয়ে যায়। সে কাজগুলো হল-

  • স্ত্রী সহবাস
  • মাথার চুল কাটা/মুন্ডন
  • হাত/পায়ের নখ কাটা
  • গোঁফ ছোট করা
  • গোপনাংশের পশম পরিষ্কার করা
  • সুগন্ধি ব্যবহার
  • সেলাই করা পোশাক পরিধান
  • প্রাণী শিকার করা

ইহরাম বাঁধার মিকাতসমূহ

বিশ্বের নানান প্রান্ত থেকে হাজিগণ হজ ও ওমরা পালন করার জন্য কাবা শরীফে আসেন। প্রত্যেক প্রান্তের হাজিদের জন্য রয়েছে ইহরাম বাঁধার ভিন্ন ও নির্দিষ্ট স্থান। এ স্থানগুলো হলো-

  • ইয়ালামলাম: বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান অর্থাৎ উপমহাদেশসহ দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলো থেকে আগতদের মিকাত
  • জুল হুলায়ফা বা বীরে আলী: মদিনাবাসী ও মদিনা হয়ে মক্কায় প্রবেশকারীদের মিকাত
  • আল-জুহফা: সিরিয়া ও মিসর এবং সেদিক থেকে আগতদের মিকাত
  • কারনুল মানাজিল বা আসসায়েল আল-কাবির: নাজদ থেকে আগতদের মিকাত
  • যাতুল ইরক: ইরাক থেকে আগতদের মিকাত

যেভাবে ইহরাম বাঁধতে হয়

হজ ও ওমরা করার জন্য যেভাবে মিকাত থেকে ইহরাম বাঁধেন হাজীগণ, নিচে সে নিয়মগুলো উল্লেখ করা হল-

  • হজ্জ বা ওমরার নিয়ত করা
  • পুরুষরা সেলাইযুক্ত কাপড় খুলে সেলাইবিহীন সাদা কাপড় পরিধান করা (এক টুকরো লু্ঙ্গির এবং আরেক টুকরো চাদরের মত)
  • নারীরা শালীন কাপড় পরিধান করা

ইহরাম বাঁধার আগে যেসব কাজ মুস্তাহাব

ইহরাম বাঁধার আগে বেশ কিছু কাজ রয়েছে যে কাজগুলো করা মুস্তাহাব-

  • সুগন্ধি ব্যবহার করা
  • গোঁফ-নখ ও গুপ্তস্থানের লোম পরিষ্কার করা
  • ইহরামের উদ্দেশ্যে উত্তমভাবে গোসল করা
  • দুই রাকাত নফল নামাজ পড়া
সারসংক্ষেপ

হিজাজ হজ ও উমরাহ কাফেলা বাংলাদেশের সেরা হজ ও উমরা অ্যাজেন্সিগুলোর একটি। হজ ও উমরায় হাজিগণকে সব ধরনের সেবা প্রদান করে থাকে এ অ্যাজেন্সি। আপনি নিশ্চিন্তে ও সঠিকভাবে উমরাহ পালন করতে চাইলে, যোগাযোগ করুন এই অ্যাজেন্সির সাথে।

Apply for an Umrah visa and experience the hassle-free journey to the city of Makkah.

Arrow