হজ্জের ফরজ ও ওয়াজিব কয়টি? কুরআন ও হাদিসের আলোকে ব্যাখ্যা

হজ্জ ইসলামের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ফরজ ইবাদত। এটি শুধু একটি সফর নয়, বরং আল্লাহর কাছে আত্মসমর্পণের একটি বড় প্রকাশ। কিন্তু হজ্জ সঠিকভাবে আদায় করতে হলে আগে জানতে হয়—কোন কোন আমল ফরজ, আর কোনগুলো ওয়াজিব। কারণ ফরজ ও ওয়াজিবের মধ্যে পার্থক্য না জানলে অনেক সময় অজান্তেই বড় ভুল হয়ে যেতে পারে।

হজ্জের ফরজ ও ওয়াজিব কয়টি?

বাংলাদেশ থেকে যাঁরা প্রথমবার হজ্জে যান, তাঁদের একটি বড় অংশ এই বিষয়টি পরিষ্কারভাবে জানেন না। ফলে হজ্জের সময় বিভ্রান্তি তৈরি হয়। এই লেখায় আমরা কুরআন ও সহিহ হাদিসের আলোকে সহজ ভাষায় জানবো—

  • হজ্জের ফরজ ও ওয়াজিব কয়টি
  • কোনটি বাদ পড়লে হজ্জ বাতিল হয়
  • কোনটি ছুটে গেলে কী করণীয়
  • নতুন হাজীদের জন্য প্রয়োজনীয় পরামর্শ
  • শরিয়াহ পরামর্শদাতার সাথে কথা বলুন

হজ্জ কী এবং কার ওপর ফরজ?

হজ্জ হলো ইসলামের পাঁচটি স্তম্ভের একটি। হজ (Hajj) একটি আরবি শব্দ। এর অর্থ হলো সংকল্প করা বা কোনো গুরুত্বপূর্ণ উদ্দেশ্যে দৃঢ় সিদ্ধান্ত নেওয়া। ইসলামি পরিভাষায়, হজ বলতে বোঝায়—জিলহজ মাসের নির্দিষ্ট সময়ে সৌদি আরবের পবিত্র মক্কা নগরী ও তার আশপাশের নির্ধারিত স্থানগুলোতে আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্যে কিছু নির্দিষ্ট ইবাদত ও নিয়মকানুন পালন করা।

বিঃদ্রঃ এই ইবাদতগুলো কুরআন ও সুন্নাহ অনুযায়ী নির্ধারিত, এবং সঠিক নিয়মে আদায় করলেই হজ সহিহ হয়।

কার ওপর হজ্জ ফরজ?

শারীরিক ও আর্থিকভাবে সামর্থ্যবান (সুস্থ, প্রাপ্তবয়স্ক, স্বাধীন এবং ঈমানদার মুসলিম নর-নারী এবং যাতায়াত ও থাকার সামর্থ্য আছে) প্রত্যেক মুসলিমের ওপর জীবনে অন্তত একবার হজ পালন করা ফরজ। এর জন্য নির্দিষ্ট সময়ে মক্কা নগরীতে গিয়ে কাবা ঘর তাওয়াফসহ কিছু নির্ধারিত ইবাদত আদায় করতে হয়।

কার ওপর হজ্জ ফরজ?

আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কুরআনে বলেন—

"وَلِلّٰهِ عَلَى النَّاسِ حِجُّ الْبَيْتِ مَنِ اسْتَطَاعَ إِلَيْهِ سَبِيلًا ۚ وَمَن كَفَرَ فَإِنَّ اللّٰهَ غَنِيٌّ عَنِ الْعَالَمِينَ"

“আর আল্লাহর জন্য মানুষের ওপর এই ঘরের হজ্জ করা ফরজ—যারা সেখানে পৌঁছার সামর্থ্য রাখে। আর কেউ অস্বীকার করলে জেনে রাখুক, আল্লাহ সমগ্র জগতের মুখাপেক্ষী নন।” (সূরা আলে ইমরান: ৯৭)

রাসুলুল্লাহ ﷺ-কে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল, হজ্জ কি প্রতি বছর ফরজ? তখন তিনি উত্তর দেন—
“لَوْ قُلْتُ نَعَمْ لَوَجَبَتْ وَلَمَا اسْتَطَعْتُمْ”
“আমি যদি ‘হ্যাঁ’ বলতাম, তাহলে তা প্রতি বছর ফরজ হয়ে যেত, আর তোমরা তা পালন করতে সক্ষম হতে না।” (সহিহ মুসলিম, হাদিস: ১৩৩৭)

উপরিউক্ত আয়াত এবং হাদিস থেকে স্পষ্ট হয়—

  • হজ্জ ফরজ
  • সামর্থ্য থাকলে
  • জীবনে একবার। এরপর কেউ হজ্জ করলে তা নফল হিসেবে গণ্য হয়।

হজ্জের ফরজ ও ওয়াজিব জানা কেন জরুরি?

হজ্জের ফরজ ও ওয়াজিব জানা জরুরি, কারণ এগুলোর ওপরই হজ্জের শুদ্ধতা ও গ্রহণযোগ্যতা নির্ভর করে। ফরজ কোনো আমল বাদ পড়লে হজ্জ সম্পূর্ণভাবে বাতিল হয়ে যায়। আর ওয়াজিব কোনো আমল ছুটে গেলে তার পরিবর্তে দম (কোরবানি) দিতে হয়।

হজ্জের ফরজ ও ওয়াজিব জানা কেন জরুরি?

দম আদায় না করলে হজ্জ ত্রুটিপূর্ণ থেকে যায় এবং পূর্ণাঙ্গভাবে সম্পন্ন হয় না। এ কারণে সঠিক ও কবুলিয়াতপূর্ণ হজ্জ পালনের জন্য ফরজ ও ওয়াজিব সম্পর্কে পরিষ্কার জ্ঞান থাকা অত্যাবশ্যক।

  • হজ্জ বাতিল হওয়ার ঝুঁকি কমে
  • ভুল হলে করণীয় সম্পর্কে ধারণা থাকে
  • আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে হজ্জ আদায় করা যায়
  • হজ্জ কবুল হওয়ার সম্ভাবনা বাড়ে

হজ্জের ফরজ কয়টি?

হজ্জের ফরজ মোট ৩টি। এই তিনটি ফরজ ছাড়া হজ্জ কখনোই সহিহ হবে না।

হজ্জের ফরজ কয়টি? ১️

ইহরাম বাঁধা: হজ্জ শুরুর প্রথম ও অপরিহার্য ফরজ

হজ্জের প্রথম ফরজ হলো ইহরাম। ইহরাম মানে শুধু সাদা কাপড় পরা নয়। বরং—

  • হজ্জের নিয়ত করা
  • তালবিয়া পাঠ শুরু করা
  • কিছু কাজ নিজের ওপর হারাম করে নেওয়া

রাসুলুল্লাহ ﷺ বলেছেন—

“إِنَّمَا الْأَعْمَالُ بِالنِّيَّاتِ”

“সমস্ত কাজ নিয়তের ওপর নির্ভরশীল।” (সহিহ বুখারি, হাদিস: ১)

ইহরাম ছাড়া কেউ যদি মক্কায় পৌঁছেও যায়, তাহলেও তার হজ্জ শুরু হবে না। ইহরাম ছাড়া হজ্জ হয় না—এটি পরিষ্কারভাবে মনে রাখতে হবে।

২️

আরাফাতে অবস্থান: হজ্জের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ফরজ

আরাফার ময়দানে অবস্থান হলো হজ্জের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ফরজ। রাসুলুল্লাহ ﷺ স্পষ্টভাবে বলেছেন— “الْحَجُّ عَرَفَةُ”

“হজ্জ হলো আরাফা।” (তিরমিজি, আবু দাউদ)। এর অর্থ—আরাফাতে অবস্থান ছাড়া হজ্জই নেই।

কখন আরাফাতে থাকতে হয়?

যদি কেউ আরাফাতে এক মুহূর্তও না থাকে, তার হজ্জ হবে না—যত কিছুই সে করুক না কেন।

  • ৯ জিলহজ্জ, যোহরের পর থেকে ফজরের আগ পর্যন্ত
  • অল্প সময় হলেও অবস্থান করলেই ফরজ আদায় হয়ে যায়
৩️

তাওয়াফে জিয়ারত: কাবা শরিফে ফরজ তাওয়াফের বিধান

তাওয়াফে জিয়ারত (তাওয়াফে ইফাদা) হলো হজ্জের তৃতীয় ফরজ। তাওয়াফ ছাড়া হজ্জ পূর্ণ হয় না। আল্লাহ তায়ালা বলেন—

“ثُمَّ لْيَقْضُوا تَفَثَهُمْ وَلْيُوفُوا نُذُورَهُمْ وَلْيَطَّوَّفُوا بِالْبَيْتِ الْعَتِيقِ”

“অতঃপর তারা যেন তাদের অপরিচ্ছন্নতা দূর করে এবং কাবা ঘরের তাওয়াফ করে।” (সূরা হজ্জ: ২৯)।

এই তাওয়াফ সাধারণত—

  • ১০ জিলহজ্জের পর করা হয়
  • ঈদের দিন বা পরের দিনগুলোতে করা যায়

ফরজ বাদ পড়লে কী হবে?

হজ্জের কোনো ফরজ আমল যদি বাদ পড়ে, তাহলে হজ্জ সহিহ হয় না। অর্থাৎ হজ্জ বাতিল হয়ে যায়। এই ক্ষেত্রে দম বা কোরবানি দিয়েও সেই ঘাটতি পূরণ করা সম্ভব নয়।

  • ফরজ বাদ পড়লে হজ্জ বাতিল
  • দম দিলেও ফরজের বিকল্প হয় না
  • পরবর্তী বছরে আবার হজ্জ করতে হবে
  • গুনাহ থেকে বাঁচতে আল্লাহর কাছে তওবা করা জরুরি

হজ্জের ওয়াজিব কয়টি?

হজ্জের ওয়াজিব মোট ৬টি। ওয়াজিবগুলো ফরজের পরেই গুরুত্বের দিক থেকে আসে।

হজ্জের ওয়াজিব কয়টি ১️

মুজদালিফায় অবস্থান: আরাফাতের পর গুরুত্বপূর্ণ ওয়াজিব আমল

আরাফাত থেকে ফিরে মুজদালিফায় রাত যাপন করা ওয়াজিব।

পবিত্র কুরআনে ইরশাদ হয়েছে—

”فَإِذَا أَفَضْتُمْ مِّنْ عَرَفَاتٍ فَاذْكُرُوا اللّٰهَ عِندَ الْمَشْعَرِ الْحَرَامِ”

“আর যখন তোমরা আরাফাত থেকে প্রত্যাবর্তন করো, তখন মাশআরুল হারামে আল্লাহকে স্মরণ করো।” (সূরা বাকারা: ১৯৮)

২️

মিনায় রাত্রিযাপন: আইয়ামে তাশরিকে হাজীদের জন্য নির্ধারিত ওয়াজিব

১০, ১১ ও ১২ জিলহজ্জ মিনায় রাত কাটানো ওয়াজিব। রাসুলুল্লাহ ﷺ নিজে মিনায় অবস্থান করেছেন এবং সাহাবাদেরও তা করতে বলেছেন।

হাদিসে এসেছে,

“أَقَامَ رَسُولُ اللّٰهِ ﷺ بِمِنًى أَيَّامَ التَّشْرِيقِ”

“রাসুলুল্লাহ ﷺ আইয়ামে তাশরিকে মিনায় অবস্থান করেছেন।” (সহিহ বুখারি, হাদিস: ১৭৫১)

৩️

জামারাতে/শয়তানের প্রতীকে পাথর নিক্ষেপ

শয়তানের প্রতীক তিন জামারাতে পাথর নিক্ষেপ করা ওয়াজিব। এটি ইবরাহিম (আ.)-এর স্মৃতির সঙ্গে সম্পর্কিত একটি আমল।

হাদিসে বর্ণিত হয়েছে,

“خُذُوا عَنِّي مَنَاسِكَكُمْ”

“তোমরা আমার কাছ থেকে তোমাদের হজ্জের নিয়ম শিখে নাও।” (সহিহ মুসলিম, হাদিস: ১২৯৭)

০৪

সাঈ করা: সাফা ও মারওয়ার মাঝে ওয়াজিব আমল

সাফা ও মারওয়ার মাঝে সাঈ করা ওয়াজিব।

আল্লাহ বলেন—

“إِنَّ الصَّفَا وَالْمَرْوَةَ مِن شَعَائِرِ اللّٰهِ”

“নিশ্চয়ই সাফা ও মারওয়া আল্লাহর নিদর্শনসমূহের অন্তর্ভুক্ত।” (সূরা বাকারা: ১৫৮)।

০৫

কুরবানী করা: তামাত্তু ও কিরান হজ্জকারীদের জন্য ওয়াজিব ইবাদত

হজ্জে তামাত্তু ও কিরানকারীদের জন্য কুরবানী ওয়াজিব।

পবিত্র কুরআনুল কারীমে বলা হয়েছে,

“فَمَا اسْتَيْسَرَ مِنَ الْهَدْيِ”

“অতঃপর সহজলভ্য কুরবানী আদায় করবে।” (সূরা বাকারা, আয়াত: ১৯৬)

০৬

বিদায়ী তাওয়াফ: মক্কা ত্যাগের আগে শেষ ওয়াজিব তাওয়াফ

মক্কা ছাড়ার আগে শেষবার কাবা ঘরের তাওয়াফ করা ওয়াজিব।

রাসুলুল্লাহ ﷺ বলেছেন—

“لَا يَنْفِرَنَّ أَحَدٌ حَتَّى يَكُونَ آخِرُ عَهْدِهِ بِالْبَيْتِ”

“তোমাদের কেউ যেন কাবা তাওয়াফ ছাড়া মক্কা ত্যাগ না করে।” (সহিহ মুসলিম, হাদিস: ১৩২৭)।

ওয়াজিব বাদ পড়লে কী হবে?

হজ্জের কোনো ওয়াজিব আমল যদি বাদ পড়ে, তাহলে হজ্জ বাতিল হয় না। তবে সেই ঘাটতি পূরণের জন্য দম (কোরবানি) দিতে হয়। দম আদায় না করলে হজ্জ ত্রুটিপূর্ণ থেকে যায়।

  • হজ্জ বাতিল হবে না
  • তবে একটি দম (কুরবানী) দিতে হবে
  • ইচ্ছাকৃতভাবে বাদ দিলে গুনাহ হবে
  • দম আদায় করলে হজ্জ পূর্ণতা লাভ করে

এক নজরে হজ্জের ফরজ ও ওয়াজিবের পার্থক্য

এই পার্থক্যগুলো জানা থাকলে হজ্জের সময় কোন আমলে সবচেয়ে বেশি সতর্ক থাকতে হবে তা পরিষ্কারভাবে বোঝা যায়, এবং হজ্জ ত্রুটিমুক্তভাবে আদায় করা সহজ হয়।

বিষয় ফরজ ওয়াজিব
গুরুত্ব সর্বাধিক ফরজের পরেই
সংখ্যা (হজ্জে) ৩টি ৬টি
বাদ পড়লে হজ্জ বাতিল হয়ে যায় হজ্জ বাতিল হয় না
বিকল্প ব্যবস্থা কোনো বিকল্প নেই দম (কোরবানি) দিতে হয়
দম দিলে পূরণ হয়? না হ্যাঁ
ইচ্ছাকৃতভাবে বাদ দিলে বড় গুনাহ গুনাহ হয়

বাংলাদেশি হাজীদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ

বাংলাদেশ থেকে হজ্জে যাওয়া অধিকাংশ হাজীর জন্য এটি জীবনের প্রথম ও সবচেয়ে বড় ইবাদত সফর। ভিড়, সময়ের চাপ এবং শারীরিক কষ্টের মধ্যে হজ্জের আমলগুলো সঠিকভাবে আদায় করতে হলে কিছু বিষয়ে আগেই সচেতন থাকা জরুরি।

বাংলাদেশি হাজীদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ
  • হজ্জে যাওয়ার আগে ফরজ ও ওয়াজিবগুলো ভালোভাবে জেনে নিন
  • আরাফাতে অবস্থান ও তাওয়াফে জিয়ারতকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিন
  • নিজের আমলের দায়িত্ব নিজে নিন, শুধু অন্যের ওপর নির্ভর করবেন না
  • কোনো আমল ছুটে গেলে দমের বিধান মনে রাখুন
  • সন্দেহ হলে সঙ্গে সঙ্গে মুআল্লিম বা আলেমকে জিজ্ঞেস করুন
  • শারীরিক সুস্থতার দিকে খেয়াল রাখুন

শেষ কথা: ফরজ ও ওয়াজিব জানলে হজ্জ সহজ হয়

হজ্জ শুধু সফর নয়, এটি জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ইবাদতগুলোর একটি। তাই ফরজ ও ওয়াজিবের যথাযথ জ্ঞান ছাড়া হজ্জে যাওয়া মানে অন্ধকারে পথ চলা। আপনি যদি আগে থেকেই জানেন—

  • কোনটি ফরজ
  • কোনটি ওয়াজিব
  • কোথায় ভুল হলে কী করতে হয়

তাহলে ইনশাআল্লাহ আপনার হজ্জ হবে শান্তিপূর্ণ, আত্মবিশ্বাসী ও কবুলের কাছাকাছি। আপনার প্রস্তুতিকে আরও সহজ করতে হিজাজ হজ্জ ওমরাহ লিমিটেড নির্ভরযোগ্য উমরাহহজ প্যাকেজ প্রদান করে, যেখানে অভিজ্ঞ গাইড ও দা‘ঈ শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত হাজীদের পাশে থাকেন।

নিয়ম-কানুন বুঝিয়ে দেওয়া, আমলের সঠিক সময় মনে করিয়ে দেওয়া এবং প্রয়োজনে সরাসরি দিকনির্দেশনা—সবকিছু মিলিয়ে সঠিক প্রস্তুতি ও অভিজ্ঞ গাইডলাইন হজ্জকে সহজ করে তোলে।

নিশ্চিন্ত হজ্জ আদায়ের জন্য আমাদের হজ্জ প্যাকেজগুলো দেখুন

আপনি যদি চান আপনার হজ্জ হোক নিয়ম অনুযায়ী, শান্তিপূর্ণ এবং দুশ্চিন্তামুক্ত—তাহলে হজ্জ প্যাকেজ নির্বাচন করা উচিত অত্যন্ত সচেতনভাবে।

আমাদের হজ্জ প্যাকেজগুলো এমনভাবে সাজানো, যেন নতুন হাজীরাও ফরজ ও ওয়াজিব আমল নিয়ে বিভ্রান্ত না হন এবং পুরো হজ্জ আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে আদায় করতে পারেন।

সুপার সেভার
Super Saver Hajj package 2027
  • Price Iconমূল্য ৳৫,৮০,০০০
  • Time Iconসময় ও দিন৩৫-৪০ দিন
ইকোনমি
Economy Hajj package 2027
  • Price Iconমূল্য ৳৬,৫০,০০০
  • Time Iconসময় ও দিন৩৫-৪০ দিন
স্ট্যান্ডার্ড
Standard Hajj Package 2027
  • Price Iconমূল্য ৳৭,৫০,০০০
  • Time Iconসময় ও দিন৩০-৩৬ দিন
প্রিমিয়াম
Premium Hajj Package 2027
  • Price Iconমূল্য ৳৮,৫০,০০০
  • Time Iconসময় ও দিন২০-২৫ দিন
লাক্সারি
luxury Hajj Package 2027
  • Price Iconমূল্য ৳১৩,৩০,০০০
  • Time Iconসময় ও দিন১৮-২১ দিন
ভিআইপি
VIP Hajj Package 2027
  • Price Iconমূল্য ৳১১,৬০,০০০
  • Time Iconসময় ও দিন১৮-২১ দিন
কাস্টমাইজড
Customized Hajj Package 2027
  • Price Iconমূল্য ৳৮,৪০,০০০ থেকে শুরু
  • Time Iconসময় ও দিন১৮-২১ দিন

হজ্জের ফরজ ও ওয়াজিব সম্পর্কে জিজ্ঞাসিত প্রশ্নাবলী

হজ্জের ফরজ মোট তিনটি। এগুলো হলো—ইহরাম বাঁধা, নির্ধারিত সময়ে আরাফাতে অবস্থান করা এবং তাওয়াফে জিয়ারত আদায় করা। এই তিনটি ফরজ ছাড়া হজ্জ সহিহ হয় না।

হজ্জের ওয়াজিব মোট ছয়টি। এর মধ্যে রয়েছে মুজদালিফায় অবস্থান, মিনায় রাত্রিযাপন, জামারাতে পাথর নিক্ষেপ, সাঈ করা, হাজীদের জন্য কুরবানী করা এবং মক্কা ত্যাগের আগে বিদায়ী তাওয়াফ করা।

হজ্জের কোনো ফরজ আমল বাদ পড়লে হজ্জ বাতিল হয়ে যায়। এ ক্ষেত্রে দম বা কোরবানি দিয়েও সেই ঘাটতি পূরণ করা যায় না।

ওয়াজিব আমল ছুটে গেলে হজ্জ বাতিল হয় না। তবে তার পরিবর্তে দম বা কুরবানী আদায় করতে হয়। দম আদায় না করলে হজ্জ ত্রুটিপূর্ণ থেকে যায়।

হজ্জ ফরজ হওয়ার মূল শর্ত ৫টি। এই শর্তগুলো পূরণ হলে একজন মুসলমানের ওপর জীবনে একবার হজ্জ ফরজ হয়। সেগুলো হলো—

  • মুসলমান হওয়া
  • প্রাপ্তবয়স্ক ও সুস্থ মস্তিষ্কের অধিকারী হওয়া
  • শারীরিকভাবে সক্ষম হওয়া
  • হজ্জের সফর ও থাকার জন্য আর্থিক সামর্থ্য থাকা
  • যাতায়াতের পথ নিরাপদ হওয়া

ইহরাম অবস্থায় স্ত্রীকে কামভাব নিয়ে স্পর্শ করা বা যৌন সম্পর্ক করা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। এতে হজ্জ নষ্ট হয়ে যেতে পারে বা বড় গুনাহ হতে পারে। তবে ইহরাম ছাড়া সাধারণ অবস্থায় স্বাভাবিক যোগাযোগে বাধা নেই।

হজ্জে যেতে সাধারণত যেগুলো লাগে তা হজ্জ এজেন্সি আগে থেকেই এই বিষয়গুলো জানিয়ে দেয়।

  • বৈধ পাসপোর্ট ও হজ্জ ভিসা
  • হজ্জ প্যাকেজের কাগজপত্র
  • প্রয়োজনীয় টিকা ও মেডিকেল সার্টিফিকেট
  • ইহরামের কাপড়
  • প্রয়োজনীয় ওষুধ ও ব্যক্তিগত সামগ্রী

হজ্জ নির্দিষ্ট সময়ে করতে হয়। এটি করা হয় জিলহজ মাসের ৮ থেকে ১২ তারিখের মধ্যে। এই নির্দিষ্ট সময়ের বাইরে হজ্জ আদায় করা যায় না।

হজ্জের ইহরাম সাধারণত ৮ জিলহজ থেকে ১০ বা ১১ জিলহজ পর্যন্ত থাকে। যখন হাজী তাওয়াফে জিয়ারত ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় আমল শেষ করে ইহরাম খুলে নেন, তখন ইহরাম শেষ হয়।

হ্যাঁ, ইহরাম অবস্থায় ঘুমানো সম্পূর্ণ জায়েজ। ইহরাম অবস্থায় ঘুমানোতে কোনো সমস্যা বা গুনাহ নেই। তবে ঘুমানোর সময় ইহরামের কাপড় ঠিকভাবে শরীরে আছে কিনা খেয়াল রাখতে হবে এবং কোন নিষিদ্ধ কাজ যেন না হয়।

Apply for an Umrah visa and experience the hassle-free journey to the city of Makkah.

Arrow